একজন আলেমের পদস্খলন- একটি জনগোষ্ঠীর অধঃপতন
একজন আলেমের পদস্খলন- একটি জনগোষ্ঠীর অধঃপতন
وَلَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَاهُ بِهَا وَلَـكِنَّهُ أَخْلَدَ إِلَى الأَرْضِ وَاتَّبَعَ هَوَاهُ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ الْكَلْبِ إِن تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَث ذَّلِكَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُواْ بِآيَاتِنَا فَاقْصُصِ الْقَصَصَ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ
অবশ্য আমি ইচ্ছা করলে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিতাম সে সকল নিদর্শনসমূহের দৌলতে। কিন্তু সে যে অধঃপতিত এবং নিজের রিপুর অনুগামী হয়ে রইল। সুতরাং তার অবস্থা হল কুকুরের মত; যদি তাকে তাড়া কর তবুও হাঁপাবে আর যদি ছেড়ে দাও তবুও হাঁপাবে। এ হল সেসব লোকের উদাহরণ; যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার নিদর্শনসমূহকে। অতএব, আপনি বিবৃত করুন এসব কাহিনী, যাতে তারা চিন্তা করে। [ সুরা আরাফ ৭:১৭৬ ]
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসির ইবনে কাসীরের বর্ণনাঃ
এই আয়াতে বনী ইসরাইলের বড় একজন আলেমের চরিত্র বর্ণনা করা হয়েছে। তার নাম ছিল বালআম ইবনে বাউর। সে ইসমে আযম জানত। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে স্বীয় নিদর্শনাবলী ও কারামাত দান করেছিলেন। সে কোন দোয়া করলে কবুল করা হত। আল্লাহর নবী হযরত মসা (আঃ) দ্বীনের দাওয়াতী কাজের জন্য তাঁকে মাদয়ান নামক এলাকায় প্রেরণ করেন। সেখানকার বাদশাহ তাঁকে অনেক উপহার সামগ্রী প্রদান করে নিজের করে নেয়। সে বাদশাহর দ্বীন কবুল করে নেয় এবং মুসার (আঃ) দ্বীন পরিত্যাগ করে।
এই আয়াতে বনী ইসরাইলের বড় একজন আলেমের চরিত্র বর্ণনা করা হয়েছে। তার নাম ছিল বালআম ইবনে বাউর। সে ইসমে আযম জানত। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে স্বীয় নিদর্শনাবলী ও কারামাত দান করেছিলেন। সে কোন দোয়া করলে কবুল করা হত। আল্লাহর নবী হযরত মসা (আঃ) দ্বীনের দাওয়াতী কাজের জন্য তাঁকে মাদয়ান নামক এলাকায় প্রেরণ করেন। সেখানকার বাদশাহ তাঁকে অনেক উপহার সামগ্রী প্রদান করে নিজের করে নেয়। সে বাদশাহর দ্বীন কবুল করে নেয় এবং মুসার (আঃ) দ্বীন পরিত্যাগ করে।
এই আয়াতের ব্যাপারে ইবনে সিয়ার (রহঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত মুসা (আঃ) তার সেনাবাহিনী নিয়ে বালআমের এলাকার (মাদয়ান) দিকে রওয়ানা দেন। মুসা (আঃ) ও তার সেনাবাহিনী আসছেন, এমন সংবাদে তথাকার লোকজন ভীত সন্ত্রস্ত পড়ে। তারা নিজেদের নিরাপত্তার চিন্তায় বালআমের কাছে গিয়ে বলে, মুসা (আঃ) ও তার সেনাবাহিনীর জন্য বদ দোয়া করুন।
তখন সে বলল, “তোমরা অপেক্ষা কর, আমি আমার প্রতিপালকের সাথে পরামর্শ করে নেই”। সে আল্লাহর সাথে পরামর্শ করলে, মুসা (আঃ) এর বিরুদ্ধে বদ দোয়া না করতে আদেশ দেয়া হয়। তার সম্প্রদায় আল্লাহর পক্ষ থেকে না সুচক আদেশ জানার পর, বালআমকে বদ দোয়ায় রাজী করার জন্য তার কাছে অনেক উপহার নিয়ে আসল। তার উচিৎ ছিল, ঐ সব গ্রহণ না করা। কিন্তু সে ঐসব উপহার গ্রহণ করে নেয়।
লোকজন ও সুযোগ বুঝে মুসা (আঃ) এর বিরুদ্ধে বদদোয়া করার জন্য চাপ দিতে থাকে। বালআম এবার ও আল্লাহর সাথে পরামর্শ করতে চাইল, কিন্তু এবার কোন পরামর্শ আসল না। ফলে লোকজন বলতে লাগল, মুসার বিরুদ্ধে বদদোয়া করা নিষেধ হলে আল্লাহ এবারও নিষেধ করতেন। ২য় বার নিষেধ করেননি, তাই আপনি বদদোয়া করতেই পারেন।
লোকজন ও সুযোগ বুঝে মুসা (আঃ) এর বিরুদ্ধে বদদোয়া করার জন্য চাপ দিতে থাকে। বালআম এবার ও আল্লাহর সাথে পরামর্শ করতে চাইল, কিন্তু এবার কোন পরামর্শ আসল না। ফলে লোকজন বলতে লাগল, মুসার বিরুদ্ধে বদদোয়া করা নিষেধ হলে আল্লাহ এবারও নিষেধ করতেন। ২য় বার নিষেধ করেননি, তাই আপনি বদদোয়া করতেই পারেন।
হতভাগা বালাআম মুসা (আঃ)এর বিরুদ্ধে দোয়া করতে চাইলে বদ দোয়ার সময় মুসার জাতির পরিবর্তে তাঁর নিজের কাওমের নাম চলে আসে। এতে লোকজন বলতে শুরু করল, আপনি তো নিজের কাওমের বিরুদ্ধে বদ দোয়া করছেন! তখন বালআম বলল, আমি ইচ্ছে করে নিজের জাতির জন্য বদ দোয়া করছিনা। আমি বুঝতে পেরেছি, মুসার বিরুদ্ধে আমার বদ দোয়া আল্লাহ কবুল করবেন না।
আমি তোমাদেরকে একটি তদবীর শিখিয়ে দিচ্ছি, এটা করলে এ লোক গুলো ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
সেটা হল ব্যাভিচার ।
আল্লাহ ব্যাভিচারকে হারাম করেছেন। কারো ব্যাভিচারে তিনি চরম অসন্তুষ্ট হন। যদি এই লোক গুলোকে ব্যাভিচারে লিপ্ত করা যায়, তাহলে তাদের ধ্বংসের আশা করা যায়। কাজেই তোমাদের স্ত্রী-কন্যাদেরকে মুসার বাহিনীর দিকে পাঠাও, কারন তারা এখন মুসার সাথে থাকার কারনে স্ত্রীদের থেকে দুরে আছে। অতপর তারা তাদের স্ত্রী-কন্যাদেরকে মুসা (আঃ) এর সেনাবাহিনীর দিকে পাঠিয়ে দিল। এমনকি তাদের বাদশার কন্যাও বাদ পড়লনা। শাহজাদীকে তার বাবা অথবা বালআম বলেছিল, সে যেন মুসা (আ;)ছাড়া অন্য কারো জন্য ব্যবহার না হয়। কথিত আছে, বনি ইসরাইলের লোকেরা ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। শাহজাদীও এক সর্দারের সাথে পাপাচারে লিপ্ত হয়েছিল। ফলে আল্লাহর গজব মহামারি আকারে এসে তাদের গ্রাস করলে তাদের সত্তর হাজার লোক মারা যায়।
সেটা হল ব্যাভিচার ।
আল্লাহ ব্যাভিচারকে হারাম করেছেন। কারো ব্যাভিচারে তিনি চরম অসন্তুষ্ট হন। যদি এই লোক গুলোকে ব্যাভিচারে লিপ্ত করা যায়, তাহলে তাদের ধ্বংসের আশা করা যায়। কাজেই তোমাদের স্ত্রী-কন্যাদেরকে মুসার বাহিনীর দিকে পাঠাও, কারন তারা এখন মুসার সাথে থাকার কারনে স্ত্রীদের থেকে দুরে আছে। অতপর তারা তাদের স্ত্রী-কন্যাদেরকে মুসা (আঃ) এর সেনাবাহিনীর দিকে পাঠিয়ে দিল। এমনকি তাদের বাদশার কন্যাও বাদ পড়লনা। শাহজাদীকে তার বাবা অথবা বালআম বলেছিল, সে যেন মুসা (আ;)ছাড়া অন্য কারো জন্য ব্যবহার না হয়। কথিত আছে, বনি ইসরাইলের লোকেরা ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। শাহজাদীও এক সর্দারের সাথে পাপাচারে লিপ্ত হয়েছিল। ফলে আল্লাহর গজব মহামারি আকারে এসে তাদের গ্রাস করলে তাদের সত্তর হাজার লোক মারা যায়।
কথিত আছে, বদ দোয়া করার সময় তার জিহ্বা উল্টে যাচ্ছিল, বাইরে বেরিয়ে পড়ছিল, লম্বা হয়ে তার ছিনার উপর ঝুলে গিয়েছিল। যা আল্লাহ কুকুরের সাথে তুলনা দিয়ে ইংগিত দিয়েছেন। তখন সে বলে উঠেছিল, আমার দুনিয়া ও গেল দ্বীন ও গেল। এখন পাপাচার ও প্রতারণার পথেই মুসার বিরুদ্ধে ফল পাওয়া যেতে পারে। যা উপরে বর্ণিত হয়েছে।
(তাফসীরে ইবনে কাসীরসহ বিভিন্ন তাফসিরে ভিন্ন ভিন্ন রিওয়ায়াতে বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায়।)
বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দিকে কিছু বড় বড় আলেমের কর্মকাণ্ড দেখলেও আজ একই চিত্র ফুটে উঠে। তারা ও কিছু দুনিয়াবী সুযোগ সুবিধার আশায় ব্যাভিচারী, অপরাধী, লুটেরা, মানুষের অধিকার হরণকারী, খুনিদের পক্ষ নিয়ে নিজেদেরকে এ যুগের বালআম বাউর বানিয়ে নিচ্ছেন। বালআম বাউরের মত তারাও নিজেদের অনেক জ্ঞানী মনে করেন। আর মানুষকে হেদায়াতের পরিবর্তে পাপাচারের দিকে, পাপাচারিদের দিকে, ব্যাভিচারিদের দিকে পরিচালিত করতে চায়। অভিশপ্ত এ আলেমদের হাত থেকে আল্লাহ দেশ ও জাতিকে হেফাজাত করুন।
আল্লাহ আমাদেরকে সকল গোমরাহি থেকে রক্ষা করুন। আমীন।
~ Credit For Mizanur Rahman Mizan
বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দিকে কিছু বড় বড় আলেমের কর্মকাণ্ড দেখলেও আজ একই চিত্র ফুটে উঠে। তারা ও কিছু দুনিয়াবী সুযোগ সুবিধার আশায় ব্যাভিচারী, অপরাধী, লুটেরা, মানুষের অধিকার হরণকারী, খুনিদের পক্ষ নিয়ে নিজেদেরকে এ যুগের বালআম বাউর বানিয়ে নিচ্ছেন। বালআম বাউরের মত তারাও নিজেদের অনেক জ্ঞানী মনে করেন। আর মানুষকে হেদায়াতের পরিবর্তে পাপাচারের দিকে, পাপাচারিদের দিকে, ব্যাভিচারিদের দিকে পরিচালিত করতে চায়। অভিশপ্ত এ আলেমদের হাত থেকে আল্লাহ দেশ ও জাতিকে হেফাজাত করুন।
আল্লাহ আমাদেরকে সকল গোমরাহি থেকে রক্ষা করুন। আমীন।
~ Credit For Mizanur Rahman Mizan
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন